বরিশালের কচুরিপানার উপহার!
প্রতিক্ষণ ডেস্ক
বাংলাদেশের জলাশয়গুলোতে প্রচুর কচুরিপানার দেখা পাওয়া যায়৷ বরিশালে কচুরিপানা থেকে তৈরি হচ্ছে উপহার সামগ্রী সহ নানা পণ্য৷ এগুলো বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে৷ আজ থাকছে কচুরিপানা নিয়ে করা কাজের কিছু ছবি।
একটা সময় উপমহাদেশের জলাশয়গুলোতে কচুরিপানার পরিমাণ এত বেড়ে গিয়েছিল যে ১৯৩৭ সালের নির্বাচনে প্রায় সব দলের ইশতাহারে দেশকে কচুরিপানা মুক্ত করার অঙ্গীকার করা হয়েছিল৷ শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক নির্বাচনে জয় লাভ করে ওয়াদা পূরণে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বলে জানা যায়৷
এখনো বাংলাদেশের খালে-বিলে, পুকুরে, নদীতে প্রচুর কচুরিপানা দেখতে পাওয়া যায়৷ তবে বরিশালে গত প্রায় ২০ বছর ধরে কচুরিপানা থেকে প্রথমে কাগজ তৈরি করে পরে উপহার সামগ্রী সহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করছেন নারীরা৷
‘প্রকৃতি’ নামে একটি সংস্থার অধীনে কাজ করছেন মহিলারা৷ কচুরিপানার কাগজ দিয়ে তাঁরা ছবির অ্যালবাম, নোটবুক, গহনা, ঝুড়ি, গিফট বক্স, গ্রিটিংস কার্ড, মালা ইত্যাদি তৈরি করেন৷
যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ সহ বিশ্বের প্রায় বিশটি দেশে এসব পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে বলে ডয়চে ভেলেকে জানান প্রকৃতির ডিজাইনার সুরাইয়া চৌধুরী৷
যুক্তরাষ্ট্রের ফেয়ার ট্রেড কোম্পানি ‘টেন থাউজেন্ড ভিলেজেস’ প্রকৃতি-র তৈরি পণ্য সবচেয়ে বেশি কেনে৷ এছাড়া রয়েছে জাপানের ‘পিপল ট্রি লিমিটেড’ ও ইটালির ‘সিটিএম’৷
সুরাইয়া চৌধুরী জানান, বরিশালের যেসব নারী এই কাজে যুক্ত তাদের জীবনে এসেছে বিশাল পরিবর্তন৷ ‘‘আগে তাঁরা কচুরিপানা সিদ্ধ করে খেতেন৷ এখন অনেকের সন্তান লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হয়েছে৷ প্রায় ৫০ শতাংশ নারীর সন্তান গ্রাজুয়েট৷ আর ছোট ছেলেমেয়েরা সবাই স্কুলে যাচ্ছে৷’’
প্রকৃতি-র হয়ে যেসব নারী কাজ করেন তাঁরা মাসে গড়ে প্রায় ৬-৭ হাজার টাকা আয় করেন৷ এছাড়া বছর শেষে তাঁরা লাভের অংশও পেয়ে থাকেন৷
প্রকৃতি-র হয়ে বরিশালের কয়েকটি অঞ্চলের এক হাজারেরও বেশি নারী কাজ করছেন৷
কচুরিপানা দিয়ে পণ্য তৈরি করায় বরিশাল অঞ্চলের জলাশয় এখন অনেকটা কচুরিপানামুক্ত রাখা যাচ্ছে৷ এর ফলে পোকামাকড়ের আবাস ধ্বংস করা সম্ভব হচ্ছে৷
জলাশয়গুলো কচুরিপানা মুক্ত থাকায় এখন লঞ্চ সহ অন্যান্য নৌযান সহজে চলাচল করতে পারছে৷
(ডয়েচে বেলে)
প্রতিক্ষন/এডি/এনজে